দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : বাঁকুড়া সদর শহর থেকে ৭২ কিলোমিটার দূরে বাঁকুড়া জেলার এক্কেবারে পূর্বপ্রান্তের বর্ডার সংলগ্ন পিছিয়ে পড়া ছোট্ট একটি গ্রাম ভাসনা , গ্রামের ওপর রোষ পড়েছে দামোদর নদের , বর্ষার সময় আকাশে সিঁদুরে মেঘ দেখলেই বাঁকুড়ার ইন্দাস ব্লকের ভাসনা গ্রামের বাসিন্দাদের ঘুম উড়ে যায় । কারন দামোদরের ভয়াল ভাঙন।
দামোদরকে একসময় বাংলার দুঃখের নদ বলা হত। আজ দামোদরের সেই দুর্নাম অনেকটাই ঘুচেছে। কিন্তু ভাসনা গ্রামের মানুষের কাছে দামোদর যেন আজো বড় দুঃখের নদ। ভাসনা গ্রামের কাছে দামোদর বড় খাই খাই। বর্ষা এলে দুকূল ছাপিয়ে যখন দামোদর নদ বইতে থাকে তখন তার করাল সর্বগ্রাসী চেহারার কাছে হার মানে ভাসনা গ্রামের পাশে থাকা নদী পাড়ের সোনার ফসল ফলানো জমি গুলি। প্রতিবছর পাড় ভাঙতে ভাঙতে নদ এগিয়ে আসতে থাকে গ্রামের কাছে। বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম সেই প্রক্রিয়কেই যেন আরো ত্বরান্বিত করে দিয়েছে। একসময় যে দামোদর গ্রাম থেকে প্রায় এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূর দিয়ে বয়ে যেত সেই দামোদরই এখন গ্রাম থেকে একশো মিটার দূরে ফুঁসছে। একদিকে বালি মাফিয়াদের রমরমা অন্যদিকে প্রশাসনের নির্বিকার মনোভাব দুইয়ের জেরে ধীরে ধীরে দামোদর দ্রুত এগিয়ে আসছে গ্রামের দিকে। এখন গ্রাম থেকেই কানে আসে ঝুপ ঝাপ পাড় ভাঙার শব্দ। এখন আস্ত ভাসনা গ্রাম দামোদর নদের গর্ভে তলিয়ে যাওয়া যেন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। স্বাভাবিক ভাবে সাধের জমিজমা, ঘর বাড়ি সব হারানোর আশঙ্কাতে এখন রাতভর দু চোখের পাতা এক করতে পারেন না ভাসনা গ্রামের মানুষ। সরকারের কাছে বহু আবেদন নিবেদন করেছেন গ্রামের মানুষ। কিন্তু প্রাপ্তির খাতায় থেকে গেছে সেই শূন্যতা। দামোদরের পাড় বাঁধিয়ে ভাসনা গ্রামকে রক্ষা করতে কি এগিয়ে আসবে না প্রশাসন? সরকারি ভাবে একটুও কি ভাবা হবে না গ্রামের কৃষিজীবী গরিব মানুষগুলোর কথা? বলবে সময়ই।